এম. সাদ্দাম হোসেন (পবন)ঃ
২০০৯ সালেও গ্রামাঞ্চলে তথ্য প্রযুক্তির কোন ব্যবহার নেই, কেউ ভাবেনি এক নিমেষে বিদেশে ছেলের সাথে প্রযুক্তির ব্যবহারে সরাসরি কথা বলতে পারবে। অবশেষে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন যখন বাস্তবে গ্রামাঞ্চলের মানুষের হাতের নাগালে চলে আসে, গ্রামের আধার সরে গিয়ে আলোকিত হতে থাকে জীবন ব্যবস্থা। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামের একজন কৃষক যখন হাতের নাগালে বসে ডিসি অফিসে জমির পর্চা বা নকল উঠানোর আবেদন করতে সক্ষম তখন তো তাকে বুঝতে কষ্ট হয় না তথ্য প্রযুক্তি সেবায় ডিজিটাল বাংলাদেশ এর ভূমিকা সম্পর্কে। সেই অন্ধকারাচ্ছন্ন গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জনগোষ্ঠী যেখানে ২০০৯ সালেও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কীত কোন ধারণা ছিলনা, কেউ বোঝেনি ছেলে-মেয়ের ভর্তি ও পরীক্ষার ফলাফল হাতের নাগালে চলে আসবে। নিজের সম্পদের কাগজ পত্র তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মুহুর্তের মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে। অসম্ভবকে সম্ভবে রূপান্তরীত করার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তথ্য প্রযুক্তিগত সেবার মাধ্যমে দ্রুত হয়ে ওঠেন শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা যাকে গ্রাম থেকে মন্ত্রনালয় পর্যন্ত সবাই ভুয়সী প্রসংশায় আবদ্ধ করেছেন সেই তরুন যুবক গাইবান্ধা সদরের কামারজানী ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইসসি) উদ্যোক্তা মাহাবুবুর রহমান। ২০০৯ সালের পূর্বের দিকে তাকালে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা মাহাবুবকে তার গ্রামের মানুষ জন তেমন ভাল চিনত না, আজ তার পাশে বাসে গ্রামের সবাই ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করছেন। মাহাবুব খুব দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিলেও তার স্বপ্ন ছিল তথ্য প্রযুক্তিগত সেবায় গ্রামকে আলোকিত করে বাংলাদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আজ সে তার বাস্তব রূপ দিয়ে সর্ব ক্ষেত্রে পেয়েছে সম্মানসহ অগণিত প্রশংসা। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র একমাত্র হাতিয়ার। গ্রামের জনগোষ্ঠীকে তথ্য প্রযুক্তির আদলে এনে প্রয়োজনীয় সেবা সমূহ কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রশাসনীক কাজ, ছেলে-মেয়ের ভর্তি ও পরীক্ষার ফলাফলসহ জনগণ কেন্দ্রীক সেবা দোড়গোড়ায় নিশ্চিত করণে প্রচেষ্টার অধিক সফলতায় আস্থা অর্জন সম্ভব হয়েছে। অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে জনগণ কেন্দ্রীক সেবা সমূহ জনগণের দোড়গোড়ায় নিশ্চিত করতে কাজ করছে উদ্যোক্তা মাহাবুবুর রহমান।
ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সরকারী-বেসরকারী সেবা সমূহ জনগণের দোড়গোড়ায় নিশ্চিত করার স্বীকৃতি স্বরূপ কামারজানী (ইউআইসসি) উদ্যোক্তা মাহাবুবুর রহমান ২০১২ সালে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয়। এই সম্মানের উৎসাহে মাহাবুব নিজেকে আরও কর্ম-চাঞ্চল্যে করার ফলে আবারও একই বছরে ডিজিটাল তথ্য ও উদ্ভাবনী মেলায় জেলা প্রশাসন তাকে জেলা শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা-২০১২ হিসাবে পুরষ্কার প্রদান করেন। এরপর মাহাবুব কামারজানী (ইউআইসসি) কে জনগণের অধিক আস্থা অর্জনে ব্যাপক পরিসরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার সম্প্রসারণে যুগোপযোগি করার লক্ষ্যে কর্ম চাঞ্চল্যতায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। যার প্রমান স্বরূপ মাহাবুবকে আবারও জেলা প্রশাসন জেলা বর্ষসেরা-২০১৩ ও ২০১৪ নির্বাচিত করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে
‘‘এমপাওয়ারিং রুরাল কমিউনিটিম রিচিং দ্যা আনরিচ’’ ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের প্রকল্প সমাপনী অনুষ্ঠানে কামারজানী (ইউআইসসি) উদ্যোক্তা মাহাবুবুর রহমান রংপুর বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা হিসাবে পুরষ্কার পেয়েছেন। তার এ সাফল্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহাবুব বলেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এক দিকে মানব সেবা করছেন, অন্যদিকে প্রযুক্তির ব্যবহারে মহূর্তের মধ্যে মানুষ তার প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করতে পারছে। স্থানীয় এইচএসসি অধ্যায়নরত ছাত্র আসাদুজ্জামান লাভলু জানান, কলেজের ভর্তি ফরম পূরণ করতে আর শহরে যেতে হয় না, হাতের নাগালে ইউআইসসি থাকায় প্রয়োজনীয় সকল কাজ করতে পারছি।
কামারজানী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুন্নবী সরকার ছকমল জানান, মাহাবুব তার কর্ম-দক্ষতার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তার অবস্থানে আজ আসীন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল মমিন খান বলেন, কামারজানী (ইউআই এসসি) উদ্যোক্তা জনগণ কেন্দ্রীক সেবা জনগণের দোড়গোড়ায় নিশ্চিত করার প্রচেষ্ঠায় খুব আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। তার সাফল্যে আমাদেরকে সকলক্ষেত্রে সম্মানিত করেছে।
{সুত্রঃ জাতীয় দৈনিক গণমুক্তি, দৈনিক জনসংকেত, সাপ্তাহিক অবিরাম পত্রিকায় ১১ জানুয়ারী ২০১৫ এর প্রকাশিত সংবাদের সফটকপি}
এম. সাদ্দাম হোসেন (পবন)
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
তারিখ : ১০.০১.২০১৫
মোবা : ০১৭৭০৩৭৫৮৫০।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস